Advertisement

header ads

ঈদুল ফিতর:নির্ভেজাল আনন্দের অকৃত্রিম উৎস---


সেই ছোট বেলা থেকেই বিভিন্ন শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে এবং একটু পরিণত বয়সে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় পড়ে আসছি “ঈদ” মানে আনন্দ,”ঈদ”মানে খুশি।কিন্তু প্রকৃত মুমিন বান্দা যারা দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার মধ্যে দিয়ে প্রবিত্র রমযান কাটিয়েছেন তাদের জন্য এই “ঈদ” বেহেশতী আনন্দের স্বর্গীয় দিন।আল্লাহ তায়ালা  তার প্রিয় নবীর উম্মত তথা আমাদেরকে জীবনে দুটি ঈদের খুশি দান করেছেন। তার মধ্যে েএকটি ঈদ-উল-ফিতর ও অন্যটি ঈদ-উল-আযহা।ঈদ-উল-ফিতর বা আসন্ন রমযানের ঈদ আমার কাছে অসম্ভব রকম  আনন্দের এক বেহেশতী উৎস।ছোট বেলায় রমযান মাস আসলেই লেখাপড়াই দীর্ঘ এক মাসের বিরতি পড়ত।তবে ফ্যামেলি ব্যাকগ্রাউন্ডের কারণে মা-বাবা ও বড় ভাই-বোনদের চাপে পড়ে লেখাপড়ার কিছুটা ভান করে চলতাম এই আর কি!রমযানের শুরূ থেকেই গঠন করা হত গোল্লাবাজি(ফটকা) ফুটানো কমিঠি।আর এই কমিঠির হোমরা চোমরা এর মধ্যে আমর মত নরাধমের নামটাও থাকত।প্রতিদিন পরিচিত বড় ভাই-বোনদের কাছ থেকে ২টাকা,৫টাকা,১০টাকা হারে চাঁদা তোলা হত।জালের গুলতে কে এক ধরনের বাজি (ফটকা) বানানোর প্রস্তুতি চলত পুরো মাস জুড়ে।লেখাপড়ার আর সময় কই?পুরো মাসের সংগ্রীহিত টাকা দিয়ে রমযান মাসের শেষ দিন কেনা হত বাহারি নামের বিভিন্ন ধরনের বাজি(ফটকা)।একটার নাম ছিল বড় বাজি,অন্যটির নাম গ্রেনেড বাজি আবার ছিল তারা বাজি, ও ছেল বাজি।বাজি গুলো কেনা হতো পটিয়ার সম্ভুর দোকান থেকে।চট্টগ্রাম -দোহাজারী ট্রেন লাইনের বেঙ্গুরা ষ্টেশনের পাশেই আমাদের গ্রাম। আমরা চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে যাওয়া ১০টার ট্রেনে করে পটিয়া যেতাম।কিন্তু যেদিন আমরা ফটকা আনতে যেতাম সেদিন কোন কারণে ট্রেন আর আসতনা।মনে হয় তার না আসাতে আমাদের উৎসাহ-উদ্দীপনার কোন ঘাটতি হত কিনা সে পরীক্ষা করে দেখত।যাক সে পরীক্ষায় আমরা উর্ত্তীন।আমরা হেঁটে হেঁটে! পাঁচ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে আমাদের পরম আকাঙ্খার ধন গোলাবাজি(ফটকা) নিয়ে আসতাম পটিয়া থেকে।আর সেই ফটকা ঈদের চাঁদ দেখা যাওয়ার সাথে সাথে ফুটানো শুরু করতাম। আর থামতাম একেবারে ঈদের দিন ফজরের আযানের সাথে।


রমযান মাসের কোন একদিন যেতাম ঈদের কেনা কাটা করতে।একটি শার্ট ও প্যান্টের জন্য  বড় ভাইয়ের সাথে সারাদিন ঘুরতাম নিউ মার্কেটে,মিমি সুপার মার্কেটে ,জহুর হকার্স মার্কেটে ও শপিং কমপ্লেক্সে।আহা! ঈদের সেকি মজা?তবে এখন আমি সংসারী হয়েও আমার কাছে ঈদের মজা এতটুকুও কমেনি বরং আর বেশি উপভোগ করি।এখন রমযান মাসের শুরু থেকেই অপেক্ষা করতে থাকি কখন শহর থেকে গ্রামের বাড়িতে যাব আর সবার সাথে অনেক দিন পর দেখা হবে।এখন ঈদের কেনাকাটা আমি আরও বেশি উপভোগ করি । কারণ আমার বাসার পাশেই আছে প্রয়োজনীয় শপিংমল।ইফতারি সেরে প্রয়োজনীয় নামাজ পড়ে ঈদের কেনাকাটায় বের হয়ে ফেরা হয় সেহেরির সময়।তখনো রাস্তাঘাঠে থাকে মানুষের কলোহল।১ম রোযা---২য় রোযা---৩য় রোযা---১ম শুক্রবার ---২য় শুক্রবার--৩য় শুক্রবার--- শবে কদর----জুমাতুল-বিদা ----এভাবে প্রতীক্ষার সময় কাটানোর পর আসে পরম কাঙ্খিত “ঈদ”। আমরা যারা অতি আনন্দে আমাদের “ঈদ” উৎসব পালন করছি আমরা কি একটু ভেবে দেখেছি আমাদের ফিলিস্তিনি ভাই-রোনেরা,আমাদের সিরিয়ার  ভাই-বোনেরা,আমাদের রোহিঙ্গা ভাই-বোনেরা কিভাবে “ঈদ” পালন করে?তারা আমাদের মুসলমান ভাই-বোন।আমাদের দূর্বল ঈমানের জন্য আমরা হয়ত কিছুই করতে পারিনা ,অন্ততপক্ষে যারা তাদের এই অবস্থার জন্য দায়ী তাদের আমরা মনে প্রানে ঘৃণাতো করতে পারি!    বিশ্বের সকল ধনী-গরীব ,সুস্থ-অসুস্থ  সকল নারী -পুরুষের জীবনে “ঈদ” আসুক মহা আনন্দে এই প্রত্যাশায়--------আল্লাহ হাফেজ।

Post a Comment

0 Comments