Advertisement

header ads

পবিত্র লাইলাতুল কদর: ঈমানের পরিপূর্ণতা--




মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের কাছে লাখো-কোটি শোকরিয়া জানাচ্ছি ,যে  পরম রহমত ,বরকত ‍ও নাজাতের মাস রমজান আমাদের জীবনে আরেকবার নসীব করেছেন।সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ নবী মুহম্মদ (সা:) এর উপর লাখো দরুদ পেশ করছি।রমজানের প্রতিটি দিনই মর্যদাসম্পন্ন।রমযানের শেষ দশদিনে আসে মহিমান্বিত রজনী পবিত্র লাইলাতুল কদর বা সৌভাগ্য রজনী।শেষ নবী মুহম্মদ (সা:) এর উম্মতগনের জন্য  এই রাত অশেষ নেয়ামত হিসেবে মহান আল্লাহ তায়ালা দান করেছেন।পূর্ববতী নবীগনের উম্মতগনের হায়াত ছিল অনেক দীর্ঘ  সময়্।তাই তাঁরা অনেক বেশী আল্লাহর  ইবাদত করতে পেরেছিলেন।শেষ নবীর উম্মতগন যাতে শেষ বিচারের দিন ক্ষতিগ্রস্থ না হয় সেই জন্য মহান আল্লাহ সুবহানাতায়ালা আমাদের দিলেন হাজার মাসের চেয়ে উত্তম প্রবিত্র শবে কদর।পবিত্র কোরাআনও হাদিস এর মতে প্রিয় নবীর উন্নতগনকে লাইলাতুল কদর  রমযান মাসের শেষ দশদিনের বিজোড় তারিখের রাতে তালাশ করতে বলা হয়েছে।কিন্ত বিশিষ্ট উলামেয়ে কেরাম ও  তাফসীর বিশারদগনের মতে আমরা রমযান মাসের ২৬ আরিখ দিবাগত রাতে প্রবিত্র এই দিনটি উদযাপন করে আসছি।এই দিনের ফজিলত ও তাৎপর্য অত্যন্ত ব্যাপক ।এই দিনের তাৎপর্য মানুষের কাছে বোধগম্য হওয়ার জন্য মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরাআন শরীফের সম্পূর্ন একটি সূরা নাজিল করেন। সূরাটির নাম সূরা কদর।মানব জীবনের সর্বশেষ পূর্নাঙ্গ জীবন বিধান আল কোরাআন এই কদরের রাতে নাজিল করা হয় প্রিয় নবী মুহম্মদ (সা:) এর উপর।এই দিনের ইবাদত বন্দেগী হাজার মাসের সমতুল্য(মতান্তরে ৮৩ বছর ৪মাস)।তাই অত্যন্ত ভয় মিশ্রিত শ্রদ্ধা নিয়ে ইবাদত বন্দেগীর মধ্যে দিয়ে আমরা  এই দিনটি  ্কাটিয়ে থাকি।এই দিনের উল্লেখযোগ্য ইবাদত গুলোর মধ্যে রয়েছে ফযিলত পূর্ণ দোয়া পাঠ,মহান আল্লাহর সুন্দরতম নাম সমূহের বেশী বেশী জিকির পাঠ, নফল নামাজ আদায়, মুরুব্বী গনের কবর জেয়ারত  ,তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় ,বেশী বেশী দুরুদ শরীফ পাঠ ,অতীত জীবনের কৃতকর্মের  জন্য মহান রাব্বুল আলামীনের নিকট তওবা করা ও মহান আল্লাহর কাছে দীর্ঘ সময় ধরে দোয়া করা ।তওবা করা মহান আল্লাহর কাছে অনেক বেশী পছন্দনীয়।তবে বিশেষ অঞ্চলের মা ‍নুষ না বুঝে কিছু বিদাআতি কর্মকান্ডে লিপ্ত হয়ে শিরক এর মত পাপ করে ।যেমন:তথাকথিত পীরের খানকায়ে গিয়ে,কবর তথা মাজারে  মাজারে গিয়ে সময়  অপচয় করা ।কিন্তু পাঁচ ওয়াক্ত সালাত জামাতের সাথে আদায় ও সালাতুত তারাবীহ আদায় করা এই দিনের স্পেশাল ইবাতদ নয়।কারন সালাত আদায় আমাদের জন্য ফরজ আর রোজা রেখে সালাতুত তারাবীহ আদায় করা অবশ্যই উচিত। আল্লাহর করূণা লাভের আশায় আমরা এই একটি দিন সারা রাত ইবাতদ বন্দেগীতে কাটিয়ে দিই।এটাতে কোন সন্দেহ নাই যে এই রাতে আমরা ইবাতদ করলে হাজার মাসের সমান  সওয়াব পাব।কিন্তু এই একটি দিনের ইবাতদে কী আমাদের ঈমানের পরিপূর্ণতা আসবেে?ইবাতদ আর খিলাফত পরস্পর সম্পর্কযুক্ত।আল্লাহর জমীনে আল্লাহর আইন প্রতিষ্ঠা তথা খিলাফত প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা এই জীবনে কী করলাম তার জন্য আমাদের আখিরাতে অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে।মুসলিম জাতি সম্পূর্ন একটি মানবদেহের মত।মানবদেহের কোন একটি অঙ্গ অসুস্থ হলে যেমন তার প্রভাব সারা দেহে ছড়িয়ে পড়ে ঠিক তেমনি কোন মুসলিম সম্প্রদায় যদি জালিমের হাতে নির্যাতিত হয় তবে তাদের উদ্ধারের জন্য আমাদের একযোগে কাজ করতে হবে।প্রবিত্র হাদিসের মতে আমাদের প্রতিবেশী যদি ক্ষুধার্ত অবস্থায় রাত্রি যাপন করে ,তাহলে আমাদের ইবাতদ গ্রহনযোগ্য হবে না।আমাদের প্রতিবেশী বা দুরের  কোন মুসলিম রাষ্ট্রের মুসলমানদের জালিমের হাতে ছেড়ে দিয়ে আমরা চুপ করে থাকলে আমাদের  ঈমানের পরিপূর্ণতা আসবেনা।যার যার অবস্থান থেকে আমাদের অবশ্যই সাধ্যমত প্রতিবাদ করতে হবে।মহান আল্লাহ আমাদের ঈমানের পরিপূর্ণতা দান করুন-আমীন।

Post a Comment

0 Comments